হাত ঘড়িটার ব্যাটারি শেষ। কাঁটাগুলো এগোতে গিয়েও থমকে যাচ্ছে বারবার ওটা থেমেই থাক। সময়টাকে স্থির রেখে একটু পুরাতন স্মৃতির অ্যালবামে চোখ মেলাচ্ছি। সেগুলো কিছু বলতে চায়। যার জন্যই আজ আমি কলম হাতে সনাতনী প্রথায় সাদা কাগজে আঁকব অপ্রকাশিত কিছু কথা।
দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে আটটা মাস। এখন আমি আপনজনের শহর ছেড়ে চলে গেছি বহুদূরে, বুকে নিজের মধ্যবিত্ত স্বপ্নটা বোতলবন্দী করা। তবু কিছু বন্ধন ছিন্ন হয়নি। আধুনিকতার ক্ষীণ সুতোতে যুক্ত আমি তুই। আমরা শীত-বসন্তের সন্ধি ক্ষণের সেই হলুদ পাতাগুলোর মত, ঝরতে গিয়েও ঝরিনা। অবশ্য জানিনা, আমি কতটা প্রয়োজনীয় তোর কাছে। না হলে, তোর আমার মাঝে এতটা পরিবর্তন হতো না বোধ করি! কারণটা উহ্যই থাক! এতদিনের না বলা কথাগুলো বালুচরে স্থান নিয়ে নিয়েছে, কি জানি কবে কোন এক ঢেউ ক্ষীণ বাঁধনের সম্মুখে ভেঙে দেবে শত শত শব্দের প্রাচীর! মনে আছে, কোন এক দুপুরে এই শব্দগুলোই অচেনাকে চিনিয়ে দিয়েছিল, অজানাকে মিলিয়ে দিয়েছিল বন্ধুত্বের স্নিগ্ধ আলোয়? বহুদিনের ফোনালাপে গড়ে ওঠা সম্পর্কটা কেন এগোতে চেয়েছিল বন্ধুত্বের চরম বিন্দুতে! কেন চেয়েছিল তোর উদ্দাম জীবনের অংশীদার হতে? উত্তরটা আমিও হাতরে বেড়াচ্ছি। তোর নিকোটিন ভরা নিঃশ্বাসে আমিও কী নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়িনি!
একটা কথা বলি, আমার সিগারেটের গন্ধটা ঠিক সহ্য হয় না। যেদিন তোর ঠোঁটে সিগারেট দেখেছিলাম, মনে হয়েছিল পুড়ছিস তুই, আর শ্বাসকষ্টে ভাঙছে আমার বুক। লেকের জলে পড়ে থাকা আধপোড়া সিগারেটটার অসহায়তাটা আমার মতনই। শুধু দেখতে পাচ্ছি একটা রোদ, একটু একটু করে মিলিয়ে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে বন্ধ হচ্ছে তোর দরজাটা। এত কিছুর পরেও অপেক্ষা করি কখন আসবে কথাগুলো। অপেক্ষার প্রাপ্তি বলতে দিনের শেষে টুকরো টুকরো গল্প। এখন যোগাযোগটা কমে গেছে তবু তাতেই সন্তুষ্ট। সময় তো প্রতি সেকেন্ডে বদলায়। কিন্তু আমি মানুষটাই অন্য ধাঁচের, শত ঝড়-ঝঞ্ঝায় বট গাছের মত ঠিক দাঁড়িয়ে থাকতে পারি।
শিকড়ের অন্তহীন আঁধারে, অজস্র জোনাকির আলোয় আজও প্রেমটা বেঁচে আছে আমারই মাটিতে। অভ্যেস বলে নাকি কিছু নেই, পাল্টে ফেলাই জীবন! তবে কিছু অভ্যাস আমার কাছে জীবন।
ইতি,
তোর সবচেয়ে বিরক্তিকর মানুষটা
অভ্যেস বলে কিছু নেই
Show your support
Write a comment ...